কালিয়াকৈরে ১৬ দফা দাবিতে ওষুধ কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ

প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, বেতন বৃদ্ধি, চাকরি স্থায়ীকরণসহ ১৬ দফা দাবিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর বিক্ষোভ করেছেন ওষুধ কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় উপজেলার কারলসুরিচাল এলাকার সফিপুর-বড়ইবাড়ি সড়কে অবস্থান নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন।

কারখানার শ্রমিকেরা জানান, জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নামের ওই কারখানার কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসেই শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ নিয়ে টালবাহানা করে, এতে বেতন বিলম্বিত হয়। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের বেতনও বৃদ্ধি করা হচ্ছে না। সব মিলিয়ে ১৬টি দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আজ সকালে শ্রমিকেরা কারখানায় কাজে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় শ্রমিকেরা সফিপুর-বড়ইবাড়ি আঞ্চলিক সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ প্রতিবেদন লেখার সময় দুপুর ১২টা পর্যন্ত শ্রমিকদের কর্মসূচি চলছিল।

রহিমা খাতুন নামের কারখানাটির এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের বেতন কোনো মাসেই সঠিক সময়ে না দিয়ে টালবাহানা করে কর্তৃপক্ষ। আমাদের বাসাভাড়া দিতে হয়, দোকান বাকি দিতে হয়। সেগুলো সময়মতো দিতে না পেরে কথা শুনতে হয়। আমাদের বেতন বাড়াতে হবে। ছাত্র আন্দোলনের সময় আমাদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ছুটির সময়ের কোনো বেতন দিচ্ছে না।’

শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সব ক্যাজুয়াল (অস্থায়ী) শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৮ হাজার এবং পুরোনো স্থায়ী শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২০ হাজার করতে হবে; সব স্থায়ী শ্রমিককে ৩ হাজার টাকা অ্যাডজাস্টমেন্ট দিতে হবে; প্রতি মাসের ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে বেতন ও ওভার টাইম একসঙ্গে দিতে হবে; এক বছর হলে সব ক্যাজুয়ালদের পারমানেন্ট (স্থায়ী) করতে হবে; সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করতে হবে, মাতৃকালীন সময়ে ৬ মাসের ছুটি এবং বেতন ভাতা প্রদান করতে হবে; আন্দোলনে সম্পৃক্ত কর্মচারীদের কোনো ধরনের হয়রানি না করা এবং অ্যাডমিন ও এইচআর–এর আওতায় ক্যানটিন পরিচালনা করা যাবে না; শ্রমিক ইউনিয়নের আওতায় ক্যানটিন পরিচালনা করতে হবে, কর্মকর্তা–শ্রমিকসহ সবার খাবারের মান সমান করতে হবে; কর্মক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনা হলে শ্রমিকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করতে হবে; ঈদে ডিউটি ক্যাশে ডাবল হাজিরা সমমূল্যে বেতন দিতে হবে; কাউকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না; নাইট বিল ১৫০ টাকা দিতে হবে, বিকেলের নাশতা মানসম্মত দিতে হবে; ৭ কর্মদিবসের মধ্যে শ্রমিকদের ভোটের মাধ্যমে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করতে হবে; বাৎসরিক বেতন সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা বৃদ্ধি করতে হবে এবং প্রতি ৩ বছর পরপর শ্রমিকদের প্রমোশন দিতে হবে; প্রতিবছর ৪টি বোনাস (বেতনের অর্ধেক) দিতে হবে এবং কোনো পারমানেন্ট শ্রমিক যদি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে চলে যান, সে ক্ষেত্রে তাঁর পাওনা তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

এ বিষয়ে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবিদাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *