দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমানের স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে প্রতিবন্ধী, অসহায়, বন্যা দুর্গত ও নদী ভাঙ্গন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দকৃত অর্থের তালিকায় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতা, কোটিপতি ব্যক্তি, হোটেল মালিক, ইউপি সদস্য ও সাংবাদিকদের নাম স্থান পেয়েছে। এতে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (সেবা) অসীম চন্দ্র বণিক স্বাক্ষরিত চলতি বছরের একটি প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, ১২৩ ব্যক্তির অনুকূলে তাদের প্রত্যেককে ৫-১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার সর্বমোট টাকার পরিমাণ সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা।
১২৩ জনের তালিকায় দেখা যায়, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুয়াকাটা প্রেস ক্লাবের কার্যকরী সদস্য অনন্ত মুখার্জি, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল ওয়ানস্টারের মালিক মো. মাহবুব আকন, প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী, ধুলাস্বার ইউপির ৯ নাম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাহ আলম, মহিপুর থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি কালাম ফরাজি, কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগ নেতা রইসুল ইসলাম শিবলু, ধুলারসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোদাচ্ছের হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর তোফায়েল আহমেদ তপু, আলীপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ফকিরের নাম এই তালিকায় স্থান পেয়েছে।
দুঃস্থ-অসহায়-প্রতিবন্ধীদের সহায়তায় সরকারি অর্থ বরাদ্দের তালিকায় নাম থাকা বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন সময় তার ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীদের নামে খাম পাঠাতেন। সেই খামে টাকা থাকতো। সেভাবে আমিও অনেক সময় পেয়েছি। তবে এই তালিকায় নাম কিভাবে এসেছে তা আমার জানা নেই।’
ধুলাস্বার ইউনিয়নের আওয়ামী কর্মী রানা জোমদ্দার বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি। কিন্তু সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমাদের বিএনপি ট্যাগ লাগিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সরিয়ে দিতেন। এই তালিকা ভাইরাল হওয়ার পরে আমার নাম দেখতে পেয়ে আমি হতভম্ব! কে বা কারা আমার নাম দিয়েছে তা আমি জানি না। আর আমি কোনো টাকা-পয়সাও পাইনি।’
সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মী রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, প্রতিমন্ত্রী প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ টাকা তার ঘরের মানুষকে দিয়েছেন। এটি দুঃখজনক। প্রতিবন্ধী-অসহায়-গরিবের পেটে লাথি মেরে কোটিপতিরা খাচ্ছে সরকারি বরাদ্দের টাকা।
এ বিষয় কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এটা সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে এসেছে। কে পাবে বা কে পাবে না সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব সাবেক প্রতিমন্ত্রীর। এই টাকা বিতরণ করা হয়ে গেছে,তালিকা যাদের নাম আছে প্রত্যেকেই টাকা নিয়েছেন।